আমরা সকলেই জানি যে ব্লগ থেকে উপার্জন করার জন্য গুগল অ্যাডসেন্স অনেক ভালো একটি মাধ্যম। এমন অনেকেই আছেন যারা ব্লগিং করেন শুধু মাত্র গুগল অ্যাডসেন্স এর জন্য। অনেক সময় একজন ব্লগার গুগল অ্যাডসেন্স নিয়ে কাজ করার চেষ্টা করলেও সফল হন না। হয়তো বা কেউ যদি কোন মত গুগল অ্যাডসেন্স আপ্প্রুভ করিয়েই ফেলে তাও দেখা যায় সে তার অ্যাকাউন্ট ধরে রাখতে পারে না।
কারন সে গুগল অ্যাডসেন্স এর দেয়া নিয়ম কানুন গুলু মানেন না ! যার কারনে গুগল অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্ট ব্যান করে দেওয়া হয়। যার কারনে অনেক ব্লগার এর মন ভেঙ্গে যায়। অনেকেই শুধু মাত্র গুগল অ্যাডসেন্স না পাওয়ার কারনে ব্লগিং ছেড়ে দেন। কেউ কেউ আবার গুগল অ্যাডসেন্স এর জন্য দ্বিতীয় বার চেষ্টা করেন। আমি আমার আজকের লিখায় আমি আপনাদের কে এটা দেখাবো যে যদি একজন ব্লগার এর গুগল অ্যাডসেন্স ব্যান করে দেওয়াও হয় তবুও সেটা খুব বড় কোন কোন প্রব্লেম না। যখন গুগল অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্ট ব্যান করে দেওয়া হয় বা অ্যাকাউন্ট আপ্প্রুভ হয়না তখন অনেক নতুন ব্লগাররা এটা চিন্তা করেন যে আমার ব্লগিং ক্যারিয়ার শেষ ! এই চিন্তা করার কোন কারনই নেই।
আমার জানা মতে যে সকল সুবিধা গুলুর কারনে সবাই গুগল অ্যাডসেন্স বেশি পছন্দ করেঃ
আমার জানা মতে যে সকল সুবিধা গুলুর কারনে সবাই গুগল অ্যাডসেন্স বেশি পছন্দ করেঃ
১. এটা সহজেই ব্যবহার করা যায়।
২. বিজ্ঞাপন এর মান নিয়ে চিন্তা করতে হয় না।
৩. মেন্যুয়ালি কোন বিজ্ঞাপন পরিবর্তন করতে হয়না।
৪. গুগল অ্যাডসেন্স এর পেমেন্ট নিয়েও কোন চিন্তা করতে হয় না।
যাই হোক, যখন কিনা আপনি গুগল অ্যাডসেন্স ব্যবহার করবেন তখন আপনাকে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে।
২. বিজ্ঞাপন এর মান নিয়ে চিন্তা করতে হয় না।
৩. মেন্যুয়ালি কোন বিজ্ঞাপন পরিবর্তন করতে হয়না।
৪. গুগল অ্যাডসেন্স এর পেমেন্ট নিয়েও কোন চিন্তা করতে হয় না।
যাই হোক, যখন কিনা আপনি গুগল অ্যাডসেন্স ব্যবহার করবেন তখন আপনাকে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে।
প্রথম সমস্যাঃ গুগল অ্যাডসেন্স এর অফিসিয়াল টিম আপনাকে যে রুল দিবে সেই রুল অনুযায়ী আপনাকে কন্টেন্ট লিখতে হবে। যদি আপনি তাদের রুল না মেনে বা তাদের রুল এর একটু বাইরে কন্টেন্ট লিখেন তাহলেই আপনার অ্যাকাউন্ট ব্যান হাওয়ার সম্ভবনা থাকে। অনেক সময় তারা অ্যাকাউন্ট ব্যান ও করে দেয়।
দ্বিতীয় সমস্যাঃ আপনি যদি আপনার ব্লগে গুগল অ্যাডসেন্স ব্যবহার করেন তাহলে আপনি কোন সিম্পল কন্টেন্ট দিতে পারবেন না। অবশ্যই আপনার কন্টেন্ট অনেক তথ্য বহুল হতে হবে। অনেক সময় দেখা যায় ব্লগ আপডেট রাখার জন্য আমরা সময় নিয়ে তথ্য বহুল কন্টেন্ট লিখতে পারিনা তখন আমাদের সিম্পল কন্টেন্ট দেওয়ার প্রয়োজন পরে, আর এটার কারনেও গুগল প্রব্লেম করে থাকে।
তৃতীয় সমস্যাঃ গুগল অ্যাডসেন্স থেকে আপনি যদি ভাল ভাবে উপার্জন করতে চান তাহলে আপনাকে কন্টেন্ট অপটিমাইজেশন এর বিভিন্ন টেকনিক জানতে হবে এবং হাই CPC কিওয়ার্ড ব্যবহার করতে হবে।
আপনি একজন নিউ ব্লগার হিসেবে আপনার জন্য হয়তো গুগল অ্যাডসেন্স কে ভাল মনে করছেন কিন্তু সেটা ভাল নাও হতে পারে।
এখন আমি আপনাদের কে বলবো, কেন এবং কিভাবে একটি গুগল অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্ট ছাড়াও আপনি অনেক ভাল করতে পারবেন।
আমি যখন টুকটাক ব্লগিং শুরু করি তখন আমার ব্লগিং সম্পর্কে কোন আইডিয়া ছিল না। আর এটা ছিল আমার অনলাইনে ক্যারিয়ার এর শুরুর দিকের ঘটনা। আমি কয়েক মাস ব্লগিং করার পড় জানতে পারি গুগল অ্যাডসেন্স এর বিষয়ে। আমি তখন ব্লগিং করতাম শুধু মাত্র নলেজ শেয়ার এর জন্য। কয়েক মাস ব্লগিং করার পর আমার উপার্জন আসলো ৪৭ ডলার তাও সেটা কোন অ্যাড এর থেকে না বা গুগল অ্যাডসেন্স এর থেকেও না। সেটা এসে ছিল একটা ওয়েব হস্টিং সাইট এর হস্ট সেল হাওয়ার কমিশন। যাই হোক এর পর গুগল অ্যাডসেন্স নিয়ে কাজ করলাম খুব একটা কিছু হল না। এটা ছিল আমার তখন কার ব্লগিং স্টোরি।
আমি এখন আপনাদের আমার কিছু বাস্তব অবিজ্ঞতা শেয়ার করবো, অনলাইন ইনকাম এর জন্য আমি কিছু ব্লগ দার করাই এবং সেই ব্লগ গুলু থেকে গুগল অ্যাডসেন্স ছাড়াই অনেক ভাল ইনকাম করতে পেরেছি। তো এমন কি হয়েছিল যার কারনে আমার এই পন্থা কে আমি আপনাকেও ফল করতে বলবো।
আপনি যদি কোন একটি বিষয় নিয়ে গবেষণা করেন তাহলেই আপনি ব্লগিং শিখতে পারবেন, আর কোন বিষয় নিয়ে গবেষণা করাটা ব্লগিং শিখার অনেক ভাল একটি মাধ্যম। যখন আপনি টাকা উপার্জনের আপডেট কোন মাধ্যম নিয়ে গবেষণা চালাবেন, উদাহারন স্বরূপ আপনি যদি কোন ভাল নিশ নিয়ে কাজ করতে চান তাহলেও যেমন আপনার সেটা নিয়ে গবেষণা করতে হবে এবং সেই নিস নিয়ে যারা কাজ করেছেন তাদের অবিজ্ঞতাটা জানতে হবে। তাই আপনাকে সব সময় খরজ করতে হবে নতুন কিছু বের করার জন্য। অথবা আপনি এটাও দেখতে পারেন যে অন্য ব্লগাররা কি নিশ নিয়ে কাজ করতেছে। তাদের মাঝখান থেকে যদিও আপনি একটা ভাল নিশ নিয়ে কাজ করেন তাহলে আপনিও ভাল করতে পারবেন। ব্লগ থেকে আপনি ভাল উপার্জন করতে হলে আপনার ব্লগে ভাল ট্র্যাফিক লাগবে। ভাল ট্র্যাফিক ছাড়া আপনি ব্লগ থেকে ভাল উপার্জন করতে পারবেন না। সব সময় চেষ্টা করবেন ট্রেন্ডিং বিষয় নিয়ে কাজ করতে তাহলে ভাল ট্র্যাফিক পাওয়া যায়। ট্রেন্ডিং বিষয় গুলুর কন্টেন্ট খুব বড় হয়না কারন বিষয়টা নতুন তাই ছোট ছোট কন্টেন্ট দিয়েও আপনি কাজ করতে পারবেন। যদি গুগল অ্যাডসেন্স থাকে তাহলে ছোট কন্টেন্ট দিলে সেটা নিয়ে গুগল ঝামেলা করে। ট্রেন্ডিং বিষয় বিষয় ছাড়া বড় কন্টেন্ট দিয়েও ভাল ট্র্যাফিক আনা সম্ভব নয়। তাই ট্রেন্ডিং বিষয়ের ছোট ছোট কন্টেন্ট নিয়ে গুগল অ্যাডসেন্স ছাড়া অন্য অ্যাড নেটওয়ার্ক নিয়ে কাজ করা তাতে অ্যাডসেন্স এর থেকে ভাল রিভিনিউ পাওয়া সম্ভব।
পরিচিত হন গুগল অ্যাডসেন্স এর বিকল্প অ্যাড নেটওয়ার্ক গুলোর সাথেঃ
গুগল অ্যাডসেন্স এর বিকল্প অ্যাড নেটওয়ার্ক গুলোর অ্যাড চার ধরনের হয়ে থাকেঃ
১. Targeted Text Ads
২. In-Text
৩. Display
৪. Banner
আমরা সকলেই মোটামুটি এই ক্যাটাগরি সম্পর্কে জানি। তারপরেও অনেকে হয়তো নাও জানতে পারে তাই লিখে দিলাম। যাইহোক এখন সব থেকে ভাল গুগল অ্যাডসেন্স এর বিকল্প অ্যাড নেটওয়ার্ক গুলো দেখে নিন।
১. Adsterra.com
২. Media.Net
৩. Chitika.com
৪. Adversal.com
৫. Infolinks.com
৬. Clicksor.com
৭. Intellilinks.com
৮. PopAds.net
৯. PopMyAds.com
১০. VigLink.com
এখানে আমি টপ ১০ টি অ্যাড নেটওয়ার্ক এর ওয়েব সাইট অ্যাড্রেস দিয়ে দিলাম। এখান থেকে যে গুলো আপনার পছন্দ হয় সে গুলো তে অ্যাকাউন্ট করে আপনি অ্যাড নিয়ে আসতে পারবেন। সব গুলোই অনেক ভাল তাই পেমেন্ট নিয়ে চিন্তা করার দরকার নেই।
এখন আমি আপনাদেরকে আরেকটি মাধ্যম সম্পর্কে বলবো যেটি দিয়েও আপনি ব্লগ থেকে অনেক উপার্জন করতে পারবেন। আর সেই মাধ্যমটি হচ্ছেঅ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং সম্পর্কে আমরা মনে হয় মোটামুটি সবাই জানি বা শুনেছি। হয়তো বা কেউ অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কি জানেন না ! যাইহোক তবুও আমি সবার সুবিধার্থে একটি বলে নিচ্ছি।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংঃ
আমরা মার্কেটিং কি কম বেশি সবাই জানি। মার্কেটিং হচ্ছে বসুন্ধরা সিটি যেয়ে গার্লফ্রেন্ড এর জন্য ঈদ এ নতুন জামা ও জুতা কেনা। তাই না? আসলে কিন্তু না আসলে মার্কেটিং হচ্ছে যে কোন পণ্য অথবা সার্ভিস এর প্রমোশন করা, প্রচার করা ও ওই পণ্য এর ক্রেতা তৈরি করা। এই মার্কেটিং আপনি যখন অনলাইন এ করবেন সেটা হবে “ডিজিটাল মার্কেটিং”। আপনি যখন আপনার এই “ডিজিটাল মার্কেটিং” স্কিল টা নিজের কোন প্রডাক্ট অথবা সার্ভিস এর বিক্রয় ও প্রমোশন এর জন্য ব্যবহার করবেন, তখন সেটা হবে ইন্টারনেট মার্কেটিং। আর আপনি যখন আপনার ডিজিটাল মার্কেটিং স্কিল টা ব্যবহার করে অন্য কারও প্রডাক্ট অথবা সার্ভিস কমিশন ভিত্তিক প্রমোশন করবেন সেটা হবে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে একজন ব্লগার খুব ভাল উপার্জন করতে পারে। আপনার ব্লগে যদি ভাল ট্র্যাফিক থাকে তাহলে আপনি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে ১০০-৫০০০ ডলার পর্যন্ত ইনকাম করতে পারবেন।
তবে একজন সফল অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার হতে গেলে প্রথমত আপনার ধৈর্য্য থাকতে হবে। আপনাকে অবশ্যই বেশ কিছু বিষয় জানতে হবে। সফল অ্যাফিলিয়েট মার্কেটারদের বিভিন্ন পরামর্শ শুনতে ও জানতে হবে। যারা অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার হতে চান তাদের জন্য অনলাইনে অনেক রিসোর্স ওয়েবসাইট রয়েছে।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এ সফলতার বিভিন্ন টিপস, পরামর্শ জানার এমনই দশটি ওয়েবসাইট এখানে উল্লেখ করা হলো।
১. মি গ্রিন
২. অ্যাফিলিয়েট সামিট
৩. হোয়াট ডাজ জো থিংক
৪. ফিঞ্চ সেলস
৫. মিসি ওয়ার্ড
৬. মার্কেটিং গরিলা
৭. শোয়েমানি
৮. আই ওয়ার্ক ইন মাই পাজামাস
৯. ডুকেও
১০. জন চো
সব শেষে আমি বলবো আপনি যদি আপনার ব্লগে ভাল কন্টেন্ট দিতে পারেন এবং ভাল ট্র্যাফিক নিয়ে আসতে পারেন তাহলে আপনাকে উপার্জন নিয়ে চিন্তাই করতে হবে না। মনে রাখবেন একটি রাস্তা বন্ধ হলে আরও হাজারো রাস্তা খুলে যায়। তাই আমি বলবো মনের ভিতর জোর রেখে কাজ করে যান, সফল আপনি হবেনই ইনশাআল্লাহ্। সময় থাকলে আমার নিজস্ব ব্লগে একটু ঘুরে আসতে পারেন।
No comments:
Post a Comment