বিডিমর্নিং ডেস্ক-
সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টায় বন্দি জঙ্গি দেলোয়ার হোসেন রিপনের ফাঁসি কার্যকরের চিঠি এসে পৌঁছেছে।জঙ্গি রিপনের ফাঁসি কার্যকরে আর কোনো বাধা নেই।
২০০৪ সালে সিলেটে তৎকালীন ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর উপর গ্রেনেড হামলা ও তিনজনকে হত্যার দায়ে নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন হরকাতুল জিহাদের (হুজি) শীর্ষ নেতা মুফতি হান্নান, শরীফ শাহেদুল আলম ওরফে বিপুল ও দেলোয়ার হোসেন রিপনের প্রাণভিক্ষার আবেদন রাষ্ট্রপতি নাকচ করে দিয়েছেন।
এখন তাঁদের ফাঁসিতে ঝুঁলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হবে। এরই মধ্যে মুফতি হান্নানেরও ফাঁসি কার্যকরের চিঠি কাশিমপুর কারাগারে পৌঁছে গেছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল গত রোববার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘তিন জঙ্গির প্রাণভিক্ষার আবেদন রাষ্ট্রপতি নাকচ করে দিয়েছেন। কারাবিধি অনুযায়ী তাঁদের দণ্ড কার্যকরের প্রস্তুতি চলছে।’
মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত অন্য দুজন- মুফতি হান্নান ও শরীফ শাহেদুল আলম ওরফে বিপুল ঢাকার কাশিমপুর কারাগারে বন্দি রয়েছেন। এদিকে, মামলায় যাবজ্জীবন দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত মফিজুর ও আবু জান্দাল আপিল করেননি। ফলে তাঁদের ওই সাজাই বহাল থাকে।
সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মো. সগির মিয়া জানান, সকালে জঙ্গি রিপনের রাষ্ট্রপতি কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন নাকচ সম্পর্কিত চিঠি এসে পৌঁছায়। তার ফাঁসি কার্যকরে আর কোনো আইনি বাধা নেই। বিধি অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
২০০৪ সালের ২১ মে সিলেটে হযরত শাহজালাল (রহ.)-এর মাজারের ফটকে তৎকালীন ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলা হয়। হামলায় পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) কামাল উদ্দিন, কনস্টেবল রুবেল আহমদ এবং হাবিল মিয়া নামের এক ব্যক্তি নিহত এবং আনোয়ার চৌধুরীসহ ৭০ জন আহত হন।
এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় ২০০৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর মুফতি হান্নান, শরীফ শাহেদুল ওরফে বিপুল, রিপনকে মৃত্যুদণ্ড এবং মহিবুল্লাহ ওরফে মফিজুর রহমান ও আবু জান্দালকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেন সিলেট দ্রুত বিচার আদালত।
রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া আসামিরা। গত বছরের ১১ ফেব্রুয়ারি আগের রায় বহাল রাখেন হাইকোর্ট। পরে আসামিদের আপিল গত ৭ ডিসেম্বর খারিজ করে দেন আপিল বিভাগ।
চলতি বছরের ১৭ জানুয়ারি পূর্ণ রায় প্রকাশিত হয়। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি আসামিরা রিভিউ আবেদন করেন। ১৯ মার্চ সে আবেদন খারিজ হয়। পরে গত ২১ মার্চ রিভিউ খারিজের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়।
২২ মার্চ হুজি নেতা মুফতি হান্নান, শরীফ শাহেদুল আলম ওরফে বিপুল এবং রিপনের রিভিউ আবেদন খারিজের পূর্ণাঙ্গ রায়ের কপি সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে এসে পৌঁছায়। সিলেট কারাগারে থাকা রিপনকে এ রায় শুনানো হয়। পরে ওইদিন সন্ধ্যায় এ তিন জঙ্গির মৃত্যু পরোয়ানা বিচারিক আদালত থেকে কারাগারে পৌঁছায়। এরপর গত ২৩ মার্চ নিজের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন রিপন। পরে ২৭ মার্চ তিনি লিখিতভাবে প্রাণভিক্ষার আবেদন করেন।
No comments:
Post a Comment