Friday, April 21, 2017

ইয়াবা ‘হোম ডেলিভারি’র সুব্যবস্থা মাত্র ৫০ থেকে ১০০ টাকা !


Advertisement

Protect Free VPN+Data Manager
FREE · Over 1 million people use this
ইসতিয়াক ইসতি।।
মাত্র ৫০ থেকে ১০০ টাকা দিলে পাওয়া যাচ্ছে ইয়াবা সেবন করার নিরাপদ স্থান। আরও আছে ‘হোম ডেলিভারি’র সুব্যবস্থা! এমন বিজ্ঞাপন দিয়েই সাভারে রেডিও কলোনী, পাকিজার পিছনে, শিমুলতলা, পশ্চিম ব্যাংক টাউন, হেমায়েতপুরের ফুলবাড়িয়া ও ইমানদিপুরসহ আশেপাশের এলাকায় প্রকাশ্যেই চলছে ভয়াবহ মাদক ব্যবসা। একদল দরিদ্র মানুষকে ব্যবহার করে একটি প্রভাশালী চক্র এ সকল এলাকায় গড়ে তুলেছে শক্তিশালী মাদক সিন্ডিকেট। তারা বিভিন্ন কৌশলে দিনে-রাতে বিক্রি করছে  ইয়াবাসহ বিভিন্ন ধরনের মাদক। যার ফলে মরণনেশা মাদকের সর্বনাশা থাবায় হাজার হাজার পরিবারের সন্তানের জীবন আজ বিপন্নের পথে। এমন সন্তানদের মায়ের কান্না সাভারের ঘরে ঘরে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় এক ভয়াবহ চিত্র। রেডিও কলোনীর থেকে একটু ভিতরে যেতেই একজন যুবকের সাথে কথা হয়। সে জানতে চায় ভাই লাগবে? ছোট–বড় সব আছে (ইয়াবা)। কালকে নতুন চালান আসছে। দাম কত জানতে চাইলে বলে, বড়টা ২৮০ এবং ছোট ২২০। কথার ফাঁকে জানা যায় এই ছেলে নাম সাদ্দাম। পেশায় ভ্যানচালক। নিজের খাওয়ার (নেশার টাকা)টাকা জোগাড় জন্য বড় ডিলারের থেকে নিয়ে হেঁটে বিক্রি করে।
অন্যদিকে পাকিজার পিছনে মালেকের বস্তিতে গেলে কথা হয় মাদক ব্যবসায়ী সেলিমের সাথে। তার কাছে সব ধরণের মাদকদ্রব্য পাওয়া যায় এবং ৫০ থেকে ৬০ টাকা বেশি দিলে ঘরে বসে খাওয়ার ব্যবস্থা করে দেয় সে।
গ্যারেজ ব্যবসায়ী মোশারফের মূলত রিক্সার গ্যারেজ থেকে মাদক ব্যবসা করে থেকে। হেমায়েতপুরের ফুলবাড়িয়ায় ও ইমানদিপুর তার মাদক বিক্রির এলাকা। তার সাথে কথা বলে জানা গেছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কিছু সদস্যকে ম্যানেজ করেই এখান থেকে তিনি মাদক ব্যবসা পরিচালিত করছেন। পরিচিত ক্রেতাদের হোম ডেলিভারি দেয়া হয়। অভিযানের আগে তাঁরা খবর পান, তখন পাল্টে যায় পরিবেশ। দুই তিন ঘণ্টা কেনা বেচা বন্ধ রাখেন।
মাদকের এই রমরমা ব্যবসা নিয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর একজন কর্মকর্তা নাম না প্রকাশে শর্ত দিয়ে জানান, কয়েকজন প্রভাবশালীর ছত্রছায়ায় এইসব এলাকায় মাদক ব্যবসা পরিচালিত হচ্ছে। যাদের অনেকেই রাজনীতির সাথে জড়িত। বিভিন্ন সময়ে চক্রের খুচরা বিক্রেতা ও কয়েক পাইকারি বিক্রেতা গ্রেফতার হলেও মূল হোতারা রয়েছে ধরা-ছোঁয়ার বাইরে।
এবিষয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খন্দকার রাকিবুর রহমানের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ঢাকায় প্রতিদিন লাখ লাখ টাকা মূল্যের মাদক বিক্রি হচ্ছে। ঢাকার আশেপাশের এলাকাতে এর পরিমাণ কিছুটা বেশি। নিয়মিত অভিযান পরিচালন করা হচ্ছে এইসব স্থানগুলোতে। তবে  প্রতিনিয়ত মাদক ব্যবসায়ীরা নতুন নতুন কৌশল অবলম্বন করাতে কিছুটা বেগ তে হচ্ছে আমাদের।
অপর দিকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিচালক (গোয়েন্দা ও অপারেশন) সৈয়দ তৌফিক উদ্দিন আহমেদ বলেন, সাভারের বিভিন্নস্থানে অবাধে মাদক বিক্রি হচ্ছে। আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করছি নিয়ন্ত্রণ করতে। স্থানীয় প্রভাবশালীরা নিয়ন্ত্রণ করছে এই মাদক চক্রগুলো। যাদের অনেকেই সরকারি দলের পদ-পদবিধারী। যে কারণে এসব মাদকের প্রকাশ কেনা বেচা বন্ধ হচ্ছে না কিছুতেই।
এ বিষয়ে সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এস.এম কামরুজ্জামান বলেন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ও পুলিশ নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করলেও থেমে নেই মাদকের ব্যবসা।
তিনি আরও বলেন, সমাজের প্রভাবশালী ব্যক্তি, রাজনৈতিক নেতা এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কিছু অসৎ সদস্যের সমন্বয়ে গঠিত শক্তিশালী সিন্ডিকেট ইয়াবা ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ করছে। যে কারণে কোনভাবেই ইয়াবার আগ্রাসন রোধ করা যাচ্ছে না। প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম ধ্বংস করে মাদক ব্যবসার সিন্ডিকেট হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা।
- See more at: http://www.Snews9.ml

No comments:

Post a Comment