Thursday, April 6, 2017

কুড়িগ্রামে রেললাইন সংস্কারে অনিয়ম, ঝুঁকিতে চালু হওয়া নতুন ট্রেন

মনিরুজ্জামান, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি-
কুড়িগ্রাম রেলস্টেশন থেকে তিস্তা রেলস্টেশন পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার রেলপথ সংস্কারকাজে মেরামতের নামে পুরনো স্লিপার দিয়ে দায়সারা গোছের কাজ চলছে।
এলাকাবাসী এ ব্যাপারে অভিযোগ করলেও আমলে নিচ্ছে না রেল কর্তৃপক্ষ। রহস্যজনক কারণে লাইন সংস্কার কাজের তথ্য দিতেও গড়িমসি করছে রেলের কর্মকর্তারা।
কিছুদিন আগে রংপুর এক্সপ্রেসের সঙ্গে একটি শাটল ট্রেন যুক্ত করে দেওয়া হয়। ট্রেনের গতি বাড়াতে লাইন সংস্কারের উদ্যোগ নেয় রেল বিভাগ। কিন্তু কাজের শুরুতেই ওঠে নানা অনিয়মের অভিযোগ।
TVC Sky Shops LTD
SHOP NOW
TVC Sky Shops LTD
কুড়িগ্রাম স্টেশন এলাকার বাসিন্দা কলেজ শিক্ষক আব্দুল কাদের জানান, ‘শনিবার তাঁরা দেখতে পান লাইনে থাকা দু-একটি স্লিপার বদলে দিলেও পুরনো ও প্রায় নষ্ট হয়ে যাওয়া কাঠের স্লিপার ব্যবহার করা হচ্ছে। পচা স্লিপার ব্যবহারের কারণে স্লিপারের সঙ্গে লাইন আটকানোর জন্য ব্যবহৃত পিন হাত দিয়ে টেনে খুলেছেন অনেকে। এ ব্যাপারে প্রতিবাদ করলেও আমলে নেননি ঠিকাদার ও রেলের কর্মচারীরা। এমনকি বিভাগীয় ব্যবস্থাপককে অভিযোগ করলে তিনিও এ ব্যাপারে মাথা না ঘামানোর পরামর্শ দেন।’
২ এপ্রিল দুপুরে সরেজমিনে কুড়িগ্রাম রেল স্টেশনের পশ্চিমে কালে এলাকায় গিয়ে দেখা যায় রেললাইন সংস্কারের কাজ চলছে। এরমধ্যে বেশিরভাগই স্থানীয় যুবক। বদরুল আলম নামের রাজশাহীর এক ঠিকাদার এই কাজ করছেন।
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী মাসুম মিয়া জানান, তাঁরা ব্রিটিশ আমলের ৬০ পাউন্ড লাইন তুলে বর্তমানে ৭৫ পাউন্ড লাইন স্থাপন করছেন। মাসুম ঘটনাস্থলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের একজন প্রকৌশলী থাকার দাবি করলেও পরে জানান ‘তিনি চলে গেছেন’।
রেল বিভাগের পক্ষ থেকে আফসার আলী নামের একজন নিম্নপদস্থ কর্মচারী কাজ তদারকি করছেন। তাঁর পদবি গ্যাংমেট। তিনি বলেন, ‘একেবারে অকেজো স্লিপার বদলে দেওয়া হচ্ছে। আর স্লিপারের পুরনো ছিদ্রে পিন (ডগস্পাইক) ঢোকানোর কারণে পিন খুলে গেছে। তবে সেদিনই জেনারেটর ও ড্রিল মেশিন ভাড়া করে নতুন করে লাইনের সঙ্গে পিন আটকে দেওয়া হয়েছে। আশা করি আর খুলবে না। ’ এদিকে রেলপথে পর্যাপ্ত পাথর না থাকায় নড়বড়ে অবস্থায় পড়ে আছে স্লিপার। এ অবস্থায়ই চলছে ট্রেন। কবে পাথর ফেলা হবে জানেন না সংশ্লিষ্টরা।
কুড়িগ্রাম রেল ও যোগাযোগ পরিবেশ উন্নয়ন গণকমিটির সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশিদ মিলন বলেন, যেভাবে রেললাইন সংস্কার করা হচ্ছে, তাতে অল্প দিনেই বেহাল অবস্থায় পড়বে এই রেলপথটি। এতে সদ্য চালু হওয়া আন্তঃনগর ট্রেন রংপুর এক্সপ্রেসের শাটল ট্রেনটিও বন্ধ হতে পারে।
রেলওয়ের লালমনিরহাট বিভাগীয় প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম জানান, রেলপথ সংস্কারকাজে ব্যবহৃত সব মালপত্র রেলওয়ের। এই কাজের সুনির্দিষ্ট বাজেট নেই জানিয়ে তিনি জানান, কাজের ঠিকাদার শুধু শ্রমিক দিয়ে কাজ শেষ করে বিল নেবেন। পুরনো স্লিপার ও পিন খুলে যাওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘কোনো সমস্যা হলে আবার লাগানো হবে। এসময় আরিফুল ইসলাম আর চোখে এ প্রতিবেদকের দিকে দেখে বলেন, এতে সমস্যা কি ?

No comments:

Post a Comment