Saturday, April 1, 2017

ব্যবহার করুন দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে শক্তিশালী এন্টিভাইরাস

আজ সকালে আমি আপনাদের কিছু প্রশ্নকরেছিলাম যদিও তেমন ভাবে ভাল কোন উত্তর পাইনি। শুধু মাত্র মামুন প্রশ্ন গুলোর উত্তর দিয়েছেন। এর জন্য তাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
এখন আমি নিজে প্রশ্ন গুলোর উত্তর দিচ্ছি। এ উত্তর গুলো আমি প্রায় আট মাস ধরে বিভিন্ন সিকিউরিটি বিষয়ক সাইট, ম্যাগাজিন থেকে সংগ্রহ করেছি।

1 নং প্রশ্নর উত্তরঃ

আমাদের দেশের কম্পিউটার গুলো যেসব ভাইরাসে বেশি আক্রান্ত হয় USA, UK, Australia এর মতো দেশে ততটা হয় না, এর অনেক কারন আছে । সেগুলো হলো আমরা যে সাইট গুলো তে বেশি বিচরন করি তারা করে না। এছাড়া ইদানিং আমাদের দেশের কিছু সোনার টুকরা ছেলে যারা কিনা কম্পিউটার সায়েন্স এর মতো বিষয়ে পড়া শুনা করে শুধু মাত্র মজা করার জন্য বা প্র্যাকটিস করার জন্য পুরাতন ভাইরাস কোড গুলোকে ব্যবহার করে নতুন কিছু ভাইরাস তৈরী করছে। শুধু তৈরীই করছে না, সেই সাথে পেন ড্রাইভ, বিভিন্ন দেশী সাইটে এ্যড করে, ব্লগে দেয়া সফটওয়্যারের সাথে, ফাইল শেয়ারিং সাইটে আপলোড, পাইরেটেড সফটওয়্যারের সিডিতে কপি এর মতো বিভিন্ন পদ্ধতিতে তা আমাদের কম্পিউটারে ছড়িয়ে দিচ্ছে। আর এ ভাইরাস সহ ফাইল গুলো অনেকে না বুঝে ডাউনলোডও করে নিচ্ছে। সফটওয়্যার পেলেই হল ডাউনলোড শুরু। সফ্টওয়্যার টা আদৌ তার কাজে লাগবে কিনা, সফটওয়্যারটা নিরাপদ কিনা ভাবে না। ফলে হাজার হাজার কম্পিউটার আক্রান্ত হচ্ছে এমন ভাইরাস দিয়ে যেগুলোকে এন্টিভাইরাস ডিটেক্ট করে না । আমাদের দেশের 5 ভাগ ব্যবহারকারী বাদে বাকি সবাই চুরি করে বিকল্প ভাবে বিভিন্ন এন্টিভাইরাস ব্যবহার করি ফলে বিভিন্ন উন্নত দেশের এন্টিভাইরাস প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান আমাদের দেশের এসব ভাইরাস নিয়ে খুব একটা মাথা ঘামায় না কারন আমাদের দেশে তারা কোন ব্যবসা করতে পারে না।

2 নং প্রশ্নর উত্তরঃ

USA, UK, Australia এসব দেশের ইউজাররা যেসব সাইটে বেশি প্রবেশ করে আমরা সেগুলোতে প্রবেশ করি তবে খুব কম আর আমরা সাধারনত ঐসব সাইটের এশিয়ান সার্ভারে প্রবেশ করি। যেমনঃ USA এর ইউজাররা http://www.google.com টাইপ করলে http://www.google.com এই প্রবেশ করে কিন্তু আমরা যখন বাংলাদেশ থেকে http://www.google.com টাইপ করি আমরা রিডাইরেক্ট হয়ে http://www.google.com.bd প্রবেশ করি। এখানে আমরা একই সাইটে প্রবেশ করলেও দুটি আলাদা সার্ভারে প্রবেশ করি।

3 নং প্রশ্নর উত্তরঃ

একটি ভাইরাস এক সাথে সব জায়গায় সমান আক্রমন করে না এর কারন অনেক ভাইরাস লেখক বিশেষ কিছু শ্রেনীর ব্যবহারকারী, দেশ, বা সাইটের ক্ষতির উদ্দ্যেশে ভাইরাস ছাড়ে। আবার অনেকে পুরো পৃথিবীর কম্পিউটারের ক্ষতির উদ্দ্যেশেও ভাইরাস তৈরী করে। যেমন কিছুদিন আগে প্রথম আলো সাইটে প্রবেশ করলে আমাদের কম্পিউটার একটি বিশেষ ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছিল যদিও দু একটি( এভাস্ট ) বাদে অন্যান্য এন্টিভাইরাস এটিকে ডিটেক্ট করতে পারেনি। এখন দেখা যাচ্ছে প্রথম আলো শুধুমাত্র আমরা যারা বাঙ্গালি অর্থাৎ বাংলাদেশের এবং ভারতের পশ্চিম বাংলার বাংলা ভাষা ব্যবহার কারীরা পড়ি। এটা বোঝা যায় যে এ ভাইরাসটি শুধু বাঙ্গালিদের উদ্দ্যেশে তৈরী করা হয়েছিল। অন্য ভাষা ব্যবহার কারীরা যেহেতু এই সাইটে প্রবেশ করে না সুতরাং তারা আক্রান্ত হবে না। যা ক্ষতি হবার শুধু বাঙ্গালিদের হবে। এটি ছাড়াও আরেকটি উদাহরন দেয়া যেতে পারে, আমরা যারা পেন ড্রাইভ ব্যবহার করি তারা এমন কিছু ভাইরাসের সম্মুখিন হই যেটা শুধুমাত্র পেন ড্রাইভ এর মাধ্যমে এক কম্পিউটার থেকে অন্য কম্পিউটার এ যায়। যারা পেন ড্রাইভ ব্যবহার করে না তারা এই ভাইরাসে আক্রান্তও হয় না। এ ক্ষেত্রেও দেখা যাচ্ছে যে একটি বিশেষ শ্রেনীর ব্যবহারকারী এই পেন ড্রাইভ ভাইরাসের লেখকের লক্ষ্য।

4 নং প্রশ্নর উত্তরঃ

আমাদের দেশ সহ দক্ষিন এশিয়ার অন্য দেশের কম্পিউটার গুলো যেসব ভাইরাসে বেশি আক্রান্ত হয় তার ডাটা কি USA এর একটি এন্টিভাইরাস কম্পানির কাছে বেশি থাকবে ? না কারন তাদের মূল ব্যবসা যেসব দেশে তারা সেসব দেশের ইউজারদের সুবিধার কথা ভাবে। আগে যেমন বলেছি আমাদের দেশের কম্পিউটার ব্যবহারকারীরা যেহেতু এসব কম্পানি থেকে বৈধ ভাবে এন্টিভাইরাস কেনে না সুতরাং আমাদের নিয়ে তাদের ভাবার সময় নেই। তবে বেশ কিছু দিন পর যখন আমাদের এসব স্থানীয় ভাইরাস নেটের মাধ্যমে ছড়িয়ে এন্টিভাইরাস কম্পানির কোন বৈধ গ্রাহকের মাথা ব্যথার কারন হয় তখন এন্টিভাইরাস কন্পানি তাদের এন্টিভাইরাস এর আপডেটে ঐ ভাইরাস রিমুভ করার অপশন দিয়ে দেয়। কিন্তু দক্ষিন এশিয়ার এন্টিভাইরাস কম্পানি যেহেতু আমাদের এদিকেরই (তাদের বৈধ ইউজাররাও এদিকেরই) সেহেতু আমাদের এসব স্থানীয় ভাইরাসের আক্রমনের সাথে সাথে তাদের বৈধ ইউজাররাও আক্রান্ত হয় ফলে তারা তাদের আপডেটে এসব ভাইরাসের তথ্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব দিয়ে দেয়।

5 নং প্রশ্নর উত্তরঃ

কোন ভাইরাস আক্রান্ত ফাইল কে এন্টিভাইরাস শুধু Clean করলে উক্ত ফাইল বেশির ভাগ সময় আর কাজ করে না কারন ভাইরাস উক্ত ফাইলের আভ্যন্তরীন লিংক গুলোতে যুক্ত হয়ে যায় আর এন্টিভাইরাস শুধু Clean করলে ভাইরাস কোডটা মুছে দেয় কিন্তু ফাইলের আভ্যন্তরীন লিংক গুলো যুক্ত করে দেয় না। ভাইরাস আক্রান্ত ফাইল কে এন্টিভাইরাস যদি Clean & Repaire করে তবে সেই ফাইল পূর্বের মতোই কাজ করে কারন এ ক্ষেত্রে এন্টিভাইরাস ফাইলের আভ্যন্তরীন লিংক গুলো পূর্বের মতো যুক্ত করে দেয় এর এটা করার প্রয়োজনীয় ডাটা এন্টিভাইরাসের ডাটাবেসেই থাকে।
এতক্ষন অনেক ব্যাপারে আলোচনা করলাম এবার বলি একটি ভাল এন্টিভাইরাস এর কি কি বৈশিষ্ঠ্য থাকা দরকার তা নিয়ে।
  • 1. এন্টিভাইরাস যতদুর সম্ভব কম রিসোর্স ব্যবহার করে সবচেয়ে বেশি প্রটেকশন দিবে।
  • 2. এন্টিভাইরাস কম্পিউটার স্লো করবে না।
  • 3. যতদুর সম্ভব নিজের দেশের বা সবচেয়ে কাছের দেশের এন্টিভাইরাস হতে হবে যাতে তার ভাইরাস ডাটাবেসে দেশে যেসব ভাইরাসের প্রর্দুভাব বেশী তার সলিউশন তাড়াতাড়া পাওয়া যায়।
  • 4. এন্টিভাইরাসের ফাইল ডিলেট বা ক্লিন না করে রিপেয়ার করার ক্ষমতা থাকতে হবে।
  • 5. প্রতিদিন এর আপডেট অনলাইন বা অফলাইন এর মাধ্যমে নেয়ার ব্যবস্থা থাকতে হবে।
  • 6. অনলাইন বা অফলাইন এর মাধ্যমে একটিভেশন করার অপশন থাকতে হবে।
উপরে বর্নিত সব বৈশিষ্ঠ্য আছে এমন এন্টিভাইরাস পাওয়া খুব কঠিন।
যেমনঃ Mcafee, Avast, Norton Anti Virus, Kasparsky এর কোনটাই আমাদের দেশের নয় এমন কি এশিয়ার ও নয়। ফলে এদের ডাটাবেসে আমাদের স্থানীয় ভাইরাস এর সলিউশন অনেক দেরি তে দেয়। ততদিনে আমাদের পিসির অনেক ফাইল আক্রান্ত হয়ে যায় আর আপডেটে সলিউশন আসা মাত্র সব ভাইরাস আক্রান্ত ফাইল হয় ডিলিট নয় তো ক্লিন হয়ে যায় আর সেই ঐসব জরুরী ফাইল ও নষ্ট হয়ে যায়। Avast, Kasparsky বেশিরভাগ ভাইরাস ইনফেক্টেড ফাইল ডিলিট করে দেয়। Mcafee, Norton Anti Virus ইন্সটল করলে পিসি এতো স্রো হয় যে নড়তেই চায় না। Mcafee, Norton Anti Virus ফাইল ক্লিন করার পরও ঐ ফাইল আর চলে না।
তবে আমি অনেক দিন (প্রায় 2 বছর) থেকে ভারতীয় একটি এন্টিভাইরাস ব্যবহার করে আসছি যার মধ্যে উপরে বর্নিত প্রায় সব বৈশিষ্ঠ্য আছে । আর এটা ব্যবহারের পর আজ পর্যন্ত আমাকে ভাইরাসের জন্য দুঃশ্চিন্তা করতে হয় নি। এন্টিভাইরাসটির নাম Quick Heal Antivirus. বন্ধুরা এটি ব্যবহার করে দেখুন আশাকরি অন্য এন্টিভাইরাসের থেকে এর পার্থক্যটা বুঝতে পারবেন। অবশ্যই Quick Heal Antivirus এবং আমার টিউনটা সম্পর্কে মন্তব্য পাঠাবেন। আজকের মতো এটুকুই। ধন্যবাদ।

No comments:

Post a Comment